Wednesday, December 2, 2015

ঠোঁটকাটা রোগীদের পাশে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল



জন্মগতভাবে ঠোঁটকাটা ও তালুকাটা ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে অস্ত্রোপচার করায় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মিরপুর। আজ ২ ডিসেম্বর, ২০১৫ -তে  এ সেবা দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্লাস্টিক সার্জন ডা. মুহাম্মদ কামরুজ্জামান ও ডা. এ এম জিয়াউল হক মাসুমের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়। 

যোগাযোগের ঠিকানা : ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, প্লট-৩১, মেইন রোড-৩, ব্লক-ডি, সেকশন-১১, মিরপুর, ঢাকা। ফোন : ০২৯০২৭৯৬২-৩।  
ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ২৪/বি আউটার সার্কুলার রোড, মতিঝিল, ঢাকা। ফোন: ৯৩৩৬৪২১-৩, ০১৯৮১৪১৫৪০৩, ০১৭২৭৬৬৬৭৪১-২। 

তাদের জিজ্ঞাসা করে জানা যায় যে, তারা কয়েক মাস পর পর এই সার্ভিস দিয়ে থাকে। গত ৬ নভেম্বর, ২০১৫ ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের মতিঝিল শাখায় এই সেবা দেয়া হয়। সেখানে প্লাস্টিক সার্জন ডা. সৈয়দ শামসুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষজ্ঞ টিম গঠন  করে এই চিকিৎসা দেয়া হয়।

Monday, August 24, 2015

কম খরচে সবার জন্য কুর্মিটোলা হাসপাতাল



ঢাকা সেনানিবাসের আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের পাশে এবং হোটেল র‍্যাডিসন ব্লু-এর বিপরীত দিকে দেখবেন চমৎকার এক দৃষ্টিনন্দন ভবন। ভবনটি দেখে বাইরে থেকে অনেক সময় মনেই হয় না, এটি একটি হাসপাতাল। কাচে ঘেরা এই হাসপাতালের নাম কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল। ২০১২ সালের ১৩ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট এই ১২ তলার হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি ও চিকিৎসা সরঞ্জামে সুসজ্জিত এই হাসপাতালে বেশ কম খরচেই চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় এবং সেটা সবার জন্য।
শুরুর কথা
হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা কীভাবে হয়েছে, এ নিয়ে কথা হয় হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘টঙ্গী জেনারেল হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাঝামাঝি কোনো সরকারি হাসপাতাল ছিল না। সরকারের পরিকল্পনা হলো, এখানে একটা সরকারি হাসপাতাল করতে হবে। আর এখানে ছিল আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ। পাশাপাশি যেন একটি প্রশিক্ষণ হাসপাতাল হয়, এটা প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া চাকরির সুযোগ যেন বাড়ানো যায়, নিয়োগ যেন ভালো হয়—এসব উদ্দেশ্যে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সম্পূর্ণ অর্থায়নে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই জায়গা সেনাবাহিনীর। সরকার সেনাবাহিনীর জায়গা লিজ নিয়ে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছে। ভবনটি ১২ তলা হলেও ওপরের চারতলা এখনো অব্যবহৃত রয়েছে।’
২০০৪ সালে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। সরকার এর তত্ত্বাবধান এবং ভবন নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছিল সেনাবাহিনীকে। অনেক অসুবিধা থাকার পরও নান্দনিক এবং খুব আধুনিক একটি হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করা হয়েছে এটিকে। সম্পূর্ণ পাবলিক এই হাসপাতাল সরকারের অর্থায়নে চলে। তবে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের সঙ্গে অধিভুক্তি এবং হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার, রেজিস্ট্রার ইত্যাদি প্রশিক্ষণ পোস্ট এখনো চালু হয়নি। চালু হওয়ার কাজ চলছে।
চিকিৎসাসেবা
কুড়িল বিশ্বরোড থেকে এসেছেন সাজেদা বেগম (৪০)। হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ১২ দিন ধরে। একিউট প্যানক্রাইটিস রোগ হয়েছে তাঁর। জানালেন, হাসপাতালের চিকিৎসার মান বেশ ভালো। চিকিৎসকরা বেশ আন্তরিক। এখানে চিকিৎসা করিয়ে সন্তুষ্টির কথাই জানালেন সাজেদা বেগম।
সুলতানা বেগম (৪২), রক্তশূন্যতা নিয়ে নয় দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। জানালেন, এখানে কম খরচে চিকিৎসা করা যায়। হাসপাতালের পরিবেশও বেশ সুন্দর। অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের মতো নয়।
পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার রোগী দেখা হয়। ১০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে রোগী দেখানো যায়। সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয়। হাসপাতালের সাততলায় আটটি কেবিন চালু করা হয়েছে এবং নয়তলায় ৫২টি কেবিন চালুর অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া ওয়ার্ডে ৩০০ রোগী সেবা নিতে পারেন। মেডিসিন, অপারেশন ও খাবার বিনামূল্যে দেওয়া হয়। সব ধরনের চিকিৎসাসেবাই এখানে দেওয়া হয়। তবে কার্ডিয়াক, নিউরোমেডিসিন, নিউরোসার্জারি, সাইক্রিয়াটি—এ বিভাগগুলো নেই। এ ছাড়া আইসিও, ট্রমা সেন্টার, ব্লাড ব্যাংক, সিসিইউ, এনআইসিইউ এগুলো এখনো চালু করা হয়নি। চালুর প্রক্রিয়া চলছে।’
পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান আরো জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৫০০ বেডের অনুমোদন দিয়েছে। তবে বর্তমানে এখানে ৩০০ বেডের সেবা দেওয়া হচ্ছে। কেননা, এখনো জনবল পর্যাপ্ত নেই এবং পথ্যের বাজেট অপর্যাপ্ত। বর্তমানে চিকিৎসক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে ৩৯৬ জন কর্মরত রয়েছেন। তবে একটি ৫০০ বেডের হাসপাতাল ভালোভাবে চালাতে আরো জনবল প্রয়োজন। সরকার কর্তৃক বাজেট বরাদ্দে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছে। একটি জেনারেল হাসপাতালে যে ধরনের চিকিৎসা করা হয়, তার প্রায় সবই এখানে করার চেষ্টা করা হয়। ৫৭০ জন জনবল চাওয়া হয়েছে সরকারের কাছে, এখন এটি চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য। ট্রেনিং পোস্ট না থাকার কারণে দুপুর ২টার পর সার্জারি দেওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া অ্যানেসথেটিসের সংখ্যাও মাত্র দুজন।
সব নিয়েই এগিয়ে যাওয়া
হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এই হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সবচেয়ে বেশি রেভিনিউ দেওয়া হয়। এখানে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে ক্যাফেটেরিয়া এবং ফার্মাসি করা হয়েছে। ক্যাফেটেরিয়া, ফার্মাসি, ইউজার ফিসহ সরকারের ঘরে একটা ভালো পরিমাণ টাকা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত আছি। আইসিডিডিআরবির সঙ্গে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের কাজে যুক্ত আছি। আমরা ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনের পার্টনার। কাছেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিমান দুর্ঘটনা বা জরুরি কিছুর চিকিৎসা যেন এখানে করা যায়, এ জন্য এই পার্টনারশিপ। এখন পর্যন্ত হাসপাতালটিকে জাইকা, ওডিসি, ডব্লিউএইচও পরিদর্শন করেছে। এটি একটি বড় পাওয়া।
হাসপাতালে খুব বেশি মানুষ আসতে পারেন না। এর কারণ হিসেবে মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এই পথে রিকশা, ভ্যানের চলাচল নেই। এ জন্য সহজে রোগী বা অসুস্থ কেউ আসতে পারেন না। এ ছাড়া আইসিইউ, ব্লাড ব্যাংক, অ্যানেসথেসিক, ট্রমা সেন্টার, ট্রেনিং পোস্ট—এগুলো চালু হওয়া দরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত ৫৭০ জন জনবল যদি দেওয়া হয়, সম্পূর্ণ চালু করার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়, মেডিকেল কলেজ অধিভুক্ত করা হয়, তাহলে এই হাসপাতাল অল্প সময়ের মধ্যে সর্বস্তরের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য অত্যাধুনিক ব্যস্ত সরকারি হাসপাতাল হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারবে বলে আশা করছি আমরা।’
ঠিকানা
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা, ঢাকা-১২০৬
ফোন : ০১৭৬৯০১০২১১ (জরুরি বিভাগ)

Source: www.ntvbd.com