Tuesday, May 17, 2011

Healthcare in Bangladesh: only sterilization and vasectomies are free

by Nozrul Islam

The government does not provide any type of health care and all medical treatments are at the expense of the patient. But the arrival of Western medicine has raised the costs and the vast majority of people struggle to buy even an aspirin.

Dhaka (AsiaNews) - In Bangladesh the only form of free health care at all (or almost) is provided by reproductive health centres, funded by the countries from northern Europe and the United States. Vasectomies and tubal ligament are part of government birth control policy: until a few years ago the state paid people who accompanied women to undergo surgery. And often, when a girl has to undergo an intestinal operation, doctors take this opportunity to sterilize them without their knowledge.

This practice led to a social outcry, but similar structures still exist and the birth rate is declining (1.6% in 2010). Bangladesh is one of the most populous countries in the world (162.2 million people), but is paying a high price for the impressive economic progress and modernization that have exploded over the last decade.

The sudden and massive introduction of Western medicine (allopathic), expensive by Bangladeshi standards, has seriously undermined a health system that provides no government assistance and is based only on traditional medicine. Given the apparent effectiveness of "modern" medicines the use of herbs, ointments and kobiraj (magic practices) have declined, causing an increase in demand and, consequently, costs.

Few people have full health care coverage, mostly government employees, and they go to private hospitals or abroad (usually India, Thailand and Singapore). For the remainder, state hospitals that exist in theory should provide free treatment: instead, as well as being insufficient in number, except for a general visit the patient must pay for prescriptions, food, medical and clinical examinations.

People’s awareness has changed - "this medicine is better and it cures me" - but the earning capacity of the population, very poor on average, has not changed. The rich have access to health care and medicine, while the poorest now know that treatment is available, but they can not do anything, because there is no public health care.

There are increasingly frequent and painful cases: people who suffer very minor injuries or illnesses which in itself would not be nothing, bronchial or intestinal forms that become chronic, wounds that degenerate from a minor infection. Especially in the villages, the poorest first attempt to treat themselves with traditional methods, when these prove ineffective, when it is almost too late they turn to the doctor or hospital.

The missions, the Church and the "sick shelters" provide a minimum form of assistance, covering the medical expenses. However, hospitals have discovered the "package" system; for a certain type of operation they ask a certain sum, but then the total balloons because of additional costs (food, blood transfusions, additional days of hospitalization). These end up doubling the price, forcing the missionaries to make painful choices because they are unable to pay for treatment for all.

The state goes someway in supporting leprosy sufferers, occasional vaccinations against rabies and tetanus, awareness campaigns on nutrition and reproductive health centres.

Source: http://www.asianews.it

Friday, May 13, 2011

অবকাশ ভবন নামে বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে-সমাজকল্যাণমন্ত্রী

ঢাকা রিপোর্ট ডট কম, ঢাকা (১৩ মে):বিভাগীয় শহরসহ অন্যান্য সুন্দর প্রাকৃতিক পরিমণ্ডলে ‘‘আবকাশ ভবন’’ নামে বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে শ্রীমঙ্গলে এ ধরনের একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রবীণ হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট ও নিবাসে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের ৪৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় একথা জানান।
তিনি বলেন, বৃদ্ধাশ্রম গুলোতে পারিবারিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এতিম শিশুর থাকার ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, সরকার ইতোমধ্যে প্রবীণ ব্যক্তিদের জটিল রোগের চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল হতে কমমূল্যে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন।ডা. মোহাম্মদ আয়াজ উদ্দিন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

বৃদ্ধাশ্রম

জু ল ফি য়া ই স লা ম
অন্ধকার গরাদের জানালার পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধা শেফালী বেগম। এখানে যাঁরা আছেন তাদের বেশিরভাগেরই বয়স আশি, বিরাশি কিংবা ছিয়াশি। লোলচর্ম দেহ, ছানি পড়া চোখ। তবুও পৃথিবীটাকে চেনার ব্যর্থ প্রয়াস। বিগত যৌবনে ফেলে আসা দিনের স্মৃতি, সুখের অলিগলি, স্বামী-সন্তান, নাতি-নাতনিদের থেকে বহুদূরে আজকের এই ঠিকানা।
ছেলে বড় ব্যবসায়ী। দু’হাতে আয় করছে। সাজানো ফ্ল্যাট। কম্পিউটার, রঙিন টিভি, ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওভেন, মোবাইল, এসি। কয়েকজন চাকর-বাকর।
বউমা রূপ নিয়ে বড় সচেতন। পার্লার থেকে পার্লারে ঘোরাঘুরি। চড়া মেকআপ। রঙ-বেরঙের সালোয়ার-কামিজ। মাঝে মধ্যে জিন্স প্যান্ট। বিদেশি কোম্পানিতে চাকরি। মা হওয়ার সময় কত কাণ্ড-কারখানা। ছেলে হবে না মেয়ে, তাই নিয়ে জল্পনা-কল্পনা। প্রতি মাসে পরীক্ষা-রিপোর্ট। নাম নিয়ে বাড়াবাড়ি। ছেলে বলে একটা, তো বউ বলে আরেকটা। অবশেষে নাম রাখা হলো অপ্সরা। যদিও নাতনির গায়ের রঙ শ্যামলা। বউমা বাচ্চাকে বুকের দুধ দেয় না। এতে নাকি ফিগার নষ্ট হয়ে যাবে।
সকাল হতে না হতেই ছেলে-বউমা যার যার কাজে বেরিয়ে পড়ে। ঘরের কাজকর্ম তো দূরে থাক। এক গ্লাস পানি ঢেলেও কেউ খায় না। ভোর বেলা পড়ে পড়ে ঘুম। নামাজ-কালামের বালাই নেই এ ঘরে। সেসব এখন দুঃস্বপ্ন। বুড়ি মা যখন কোরআন পাঠে মনোনিবেশ করেন, তখনই ও-ঘরে এরোবিক্স নিয়ে শুরু হয় লমম্ফঝমম্ফ। বাজনার তালে তালে চলে দাপাদাপি। ওদের মর্নিং ওয়াক করার সময় নেই। সূর্যোদয় কবে দেখেছে ওরা, তা বলতে পারবে না।
মাঝে মধ্যে ছেলে-বউমার মধ্যে ইগোর লড়াই, ঝগড়া, কথা কাটাকাটি। তবে রাতের বিছানাই সব সমস্যার সমাধান করে দেয়। শুধু বলির পাঁঠা এই বুড়ি মা। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া নাতনি হিন্দি সিরিয়ালে মগ্ন। মাঝে মধ্যে বাইকের পেছনে দামড়া ছেলেটার কোমর জড়িয়ে ধরে ঘুরে বেড়ায়। বাবা-মা ডোন্ট কেয়ার।
ছেলের লাভ ম্যারেজ। বড়লোক বাপের বখা মেয়ে। বহু ছেলে চরিয়ে হাতযশ। অবশেষে, ছেলে মুর্গি। বিয়ের পরেও মুর্গির চৈতন্যোদয় ঘটেনি। সর্বক্ষণ কেলিয়ে থাকে। বউমা সহজে মা হতে চায়নি। এতে সহজেই বিছানার মজা চটকে যায়। বছর তিন-চারেক শরীরের খিদে মেটার পর অতএব, নাতনি।
বুড়ি মা এখন ছেলে-বউমার চক্ষুশূল। কথায় কথায় মুখ ঝামটা-ঝামটি। টুকটাক ফাই-ফরমাস খাটা, নাতনিকে কোলে নেয়া থেকে শুরু করে কোরআন পাঠের সময় এরোবিক্স নিয়ে দাপাদাপি মুখ বুজে মেনে নেয়া ছাড়া উপায় কী? বেপরোয়া জীবনের গুরুভার, নাতনির হাইহিলের আওয়াজ, ইংরেজি গানের বেপরোয়া মাতম, হিন্দি সিরিয়ালের অহেতুক তর্জন-গর্জন। ছেলে-বউমার ফ্রি স্টাইল।
ভাগ্যিস চোখের দৃষ্টিশক্তি আর কানের শ্রবণশক্তি হ্রাস। ছেলে-বউমার ঝগড়া, নাতনির দাপাদাপি আর হুল্লোড় সবই ধোঁয়াটে।
অবশেষে ছেলে-বউয়ের ডিসিশনে এই বৃদ্ধাশ্রম। অন্ধকার ঘরে গরাদ দেয়া জানালা। বৃদ্ধার কাছে অতীত কেবলই সঞ্চয়। পেছন ফিরে দেখা। অতীত এখন অ্যালবামের পাতায় সাঁটা মরচেধরা ছবির মতো। আছে কেবল চামড়ার ভাঁজ, ফোকলা দাঁত, বাতের ব্যথা, হাতের লাঠি, আর এই অন্ধকার ঘর। সামনের রাস্তায় ফেরিওয়ালার ডাক, রিকশার টুংটাং। কর্মব্যস্ত শহর। রাতে নিঝুম চুপচাপ, পাহারাদারের হুইসেলের শব্দ।
বাইরের চেনা পৃথিবী বড্ড বাস্তব, বড্ড আনরোমান্টিক। জীবন এ মুহূর্তে বড্ড অচেনা। সম্পর্কগুলো এত ঠুনেকা? জীবন গড়িয়ে চলে নতুন ঠিকানায়। পুরনো মানুষ বড্ড মূল্যহীন। ‘ঠাকুরমার ঝুলি’র গল্প বলার দিনগুলো কত দ্রুত হারিয়ে যায়। বুকের দুধের নেই কোনো মূল্য। বাসস্থান বদলায়। বদলায় মন। তাই আজ শেফালী বেগমের নতুন ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম।
সব উত্তরসূরি কি একই রকম? না, এখনও কেউ কেউ আছেন যারা মায়ের ভালোবাসার সামান্য স্পর্শে আজও মাতোয়ারা। তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয় দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না। বউমা নিজের মেয়ের মতোই সুখ-দুঃখে পাশাপাশি অবস্থান করে। হয়তো কেউ কেউ আছেন, আমাদের সেই ঠিকানা জানা নেই।

বৃদ্ধাশ্রম-নয়..........................

যে মানুষটি নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে রাত-দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেন, তিনি হচ্ছেন বাবা। বাবা ছাড়া আর কে এমন ত্যাগ স্বীকার করে! বাবা হচ্ছে সন্তানদের প্রথম ও প্রধান পথপ্রদর্শক।
সন্তান যতোই বড় হোক না কেন বাবা-মায়ের কাছে সে সন্তান। সন্তানদের কাছে বাবা-মা থেকে আর বড় কেউ হতে পারে না। বাবাকে আমরা সবসময় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল রেখে প্রতি বছর একুশ জুন ‘বিশ্ব বাবা দিবস’ পালন করে থাকি। এদিন সন্তানরা বাবাকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে দিবসটি পালন করে থাকে।
বাবার জন্য ভালোবাসা : আজ যিনি বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন, একদিন তিনি ছিলেন চঞ্চল এক কিশোর। একসময় যিনি একপাড়া থেকে অন্য পাড়ায় ঘুরে বেড়াতেন, আজ তিনি বারান্দায় যেতেও অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। এ সময় অসহায় শিশুর মতো হয়ে পড়েন। তারা তখন চায় ছেলেমেয়েদের সান্নিধ্য। তারা যখন বৃদ্ধ, অসুস্থ ও দুর্বল, তখন অসহায় হয়ে পড়েন। এ সময় তাদের সঙ্গে সহজ-সরল, নম্র ও সুন্দর ব্যবহার করা উচিত। তাদের সেবায় আমাদের যতœবান হওয়া উচিত।
বাবা যেন সন্তানের কোনো কথায় কষ্ট না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের কথাগুলো আমাদের মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত। তাদের মতামতকে সন্তানের অবশ্যই প্রাধান্য দেয়া উচিত। সন্তানরা বাবার শারীরিক ও মানসিক সব সমস্যা বুঝতে চেষ্টা করুক। চেষ্টা করুক বাবার সঙ্গে সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে। তাদের প্রতি দয়া ও করুণা না করে একটু ভালোবাসার হাত বাড়ালেই তারা খুশি।
একদিন যে সন্তানের জন্য বাবা ছিলেন স্নেহময়, যে সন্তান একটু আঘাত পেলেই বাবা হয়ে উঠতেন চিন্তিত। যে সন্তানকে নিজে হাত দিয়ে খাইয়ে দিয়েছেন, কোলে-পিঠে করে মানুষ করেছেন এবং কখনই নিজের অসুবিধার কথা সন্তানদের বুঝতে দেননি। আজকাল সমাজে এমন কিছু সন্তান দেখা যায়, যারা কি না বাবার এতোসব আদর-যতেœর কথা ভুলে বাবাকে ঠেলে দেয় অজানা গন্তব্যে। বৃদ্ধ ও অসহায় বলে তাদের ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রমে। ঘরের মধ্যে সবার থাকার জায়গা হলেও এখানে বৃদ্ধ বাবার জায়গা হয় না। আসলে একজন বাবা তার সন্তানদের জন্য যা করেন, তা তাদের পক্ষে সারা জীবনেও শোধ করা সম্ভব নয়। বুড়ো বয়সে এসে তারা চায় একটু শান্তি, ভালোবাসা ও স্নেহ। এ বয়সে একটু আদর-যতœ পেলেই তারা খুশি হন। বাবা চান সন্তানরা যেন তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনে।
আমাদের মনে রাখা উচিত আজ যিনি সন্তান, তিনিই আগামী দিনের পিতা। বৃদ্ধ বয়সে এসে বাবারা যেহেতু শিশুদের মতো কোমলমতি হয়ে যায়, তাই তাদের জন্য সুন্দর জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরি করাই সন্তানের কর্তব্য। আর যেন কখনো কোনো বাবার ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তাদের জন্য তৈরি করতে হবে একটা নিরাপদ ও সুন্দর পৃথিবী।
কিভাবে পালন করবেন বাবা দিবস :
দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার কারণে সন্তানদের অনেক সময় পরিবারে সময় দেয়া হয় না। এতে মা-বাবা, ভাইবোনদের মধ্যে তৈরি হয় দূরত্ব। বাবা দিবসের এদিন যে যেখানেই থাকুন না কেন, সবাই একসঙ্গে এসে বাবাকে সারপ্রাইজ দিতে পারেন। এদিন আপনি আপনার বাবাকে নানা ধরনের উপহার সামগ্রী দিতে পারেন, যাতে তিনি খুশি হন। মা-বাবা, ভাইবোন মিলে সারাদিন গল্প ও একসঙ্গে খায়া-দাওয়া করে সময় কাটান। বাবাকে কেন্দ্র করে এদিন নানা রকম পিঠা-পায়েস তৈরি করা যেতে পারে। বিকালে পরিবারের সব সদস্য একত্রে শিশুপার্ক, জাদুঘরসহ ঢাকার উন্মুক্ত পার্কগুলো থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন। এতে বাবার মতো বৃদ্ধরা মনের দুর্বলতা কাটিয়ে সতেজ ও ফুরফুরে মেজাজে থাকবে। এ বয়সে বাবারা ছেলেমেয়েদের একটু সান্নিধ্য পেলে খুশিই হয়।
ওবায়দুল হান্নান রিয়াজ


Related Link:

চাঁদপুরে এই প্রথম নির্মিত হলো বৃদ্ধাশ্রম


Thursday, May 12, 2011

জীবন বাঁচাতে স্বেচ্ছায় রক্ত দিন: ব্লাড ব্যাংকের তথ্য

জীবন বাঁচাতে স্বেচ্ছায় রক্ত দিন

মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান | তারিখ: ০৭-০৫-২০১০

আল্লাহ তাআলা মানবজাতির উপকার ও জীবন রক্ষার্থে বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে নানা ধরনের উপযোগ সৃষ্টি করে রেখেছেন। মানুষকে গভীর চিন্তা-ভাবনা ও অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টি নিবদ্ধ করে গবেষণার দ্বারা এর ব্যবহার পদ্ধতি বের করে নিতে হয়। বিজ্ঞান অত্যন্ত সমৃদ্ধ হয়ে এ বিষয়টি খুব সহজ হয়ে গেছে। তাই চিকিৎসাবিদ্যা যত উন্নত হবে মানবসেবা তত নিশ্চিত হবে। সমাজে চিকিৎসকেরা নানাভাবে মানবসেবা করে যাচ্ছেন, এ জন্য তাঁরা সাধুবাদ গ্রহণের পাশাপাশি সৎ নিয়ত ও আন্তরিকতা দ্বারা বাহ্যত জাগতিক কাজগুলোকেও ইসলামসম্মত কাজ বানিয়ে নিতে পারেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি পৃথিবীর সবকিছু তোমাদের উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত- ২৯)
চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে ইসলামের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। ফলে যুগে যুগে অসংখ্য মুসলিম মনীষী পবিত্র কোরআন ও হাদিস গবেষণা করে নিজেদের এ শাস্ত্রের পথিকৃৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। আধুনিক বিজ্ঞান চিকিৎসাব্যবস্থাকে অকল্পনীয় সহজলভ্য করে দিয়েছে। আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমতে মুষ্টিমেয় কিছু দুরারোগ্য ব্যাধি ছাড়া প্রায় সব রোগের চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়েছে। এ জন্য ওষুধ প্রয়োগ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং তাঁর বিধি-নিষেধের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সুবিবেচনা কাম্য। অবশ্য অনন্যোপায় হলে জীবন রক্ষার্থে হারাম বস্তুও প্রয়োজন অনুযায়ী হালাল হিসেবে গণ্য হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ সব রোগের প্রতিষেধক সৃষ্টি করেছেন, সুতরাং তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কর এবং চিকিৎসা গ্রহণে হারাম বস্তু ও পন্থাকে বর্জন কর।’ (আবু দাউদ)
আবহমানকাল ধরে চিকিৎসা বিজ্ঞানে মানবদেহের জন্য রক্তের ব্যবহার ব্যাপক। মানবসেবায় রক্তদান এবং রক্ত গ্রহণের আগে শরিয়তের সিদ্ধান্ত জেনে নিলে নেককাজে বিশেষভাবে আগ্রহ জন্মাবে। ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের মূল্যবান জীবন ও দেহ সুরক্ষায় রক্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য তরল উপাদান। যেকোনো দুর্ঘটনায় শরীর থেকে রক্ত ঝরে গেলে দেহের অভ্যন্তরে অন্ত্র বা অন্য কোনো অঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হলে অস্ত্রোপচারে রক্তের অপচয় বেশি হলে, পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারে পুড়ে যাওয়া রোগীর যাদের হেমোডায়ালাইসিস চলছে তখন রক্তের খুব প্রয়োজন। অপারেশনের সময়, বড় ধরনের দুর্ঘটনার মতো নাজুক অবস্থায় রক্ত দেওয়া আবশ্যিক হয়ে পড়ে। মানবদেহে রক্তশূন্যতার জন্য রক্ত গ্রহণের যেমন বিকল্প নেই, তেমনি রক্তের চাহিদা পূরণের জন্য রক্ত দেওয়া ও বিক্রয় বৈধ নয়। তবে বিনামূল্যে রক্ত না পেলে রোগীর জন্য রক্ত ক্রয় করা বৈধ, কিন্তু এতে বিক্রেতা গুনাহগার হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক রোগের ওষুধ আছে। সুতরাং যখন রোগ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা হয়, তখন আল্লাহর হুকুমে রোগী আরোগ্য লাভ করে।’ (মুসলিম)
স্বেচ্ছায় রক্তদানে অন্য মানুষের মূল্যবান জীবন রক্ষা পায় এবং নিজের জীবনও ঝুঁকিমুক্ত থাকে। নিয়মিত রক্ত দিলে নিজের জীবনও ঝুঁকিমুক্ত রাখা সম্ভব হবে। সৎকাজ ও নেক নিয়তের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে যথাযথ প্রতিদানও মিলবে। নিয়মিত রক্ত দিলে প্রাথমিক অবস্থাতেই রোগ-ব্যাধি ধরা পড়ে। এ জন্য প্রথম অবস্থাতেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। একজন সুস্থ লোকের রক্তের বিনিময়ে অন্য একজন অসুস্থ ও মুমূর্ষু ভাইয়ের জীবন রক্ষা পেলে শরিয়ত অনুমোদিত হওয়ায় আগ্রহচিত্তেই তা দেওয়া উচিত। মানবতার উপকার ও জীবন রক্ষার্থে রাসূলুল্লাহ (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘তোমাদের কেউ তার অপর ভাইয়ের উপকার করতে সক্ষম হলে সে যেন তা করে।’ (মুসলিম)
স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার জন্য অনেক মানুষের আগ্রহ আছে। কিন্তু সমন্বয়ের জন্য রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। বাংলাদেশে প্রতি বছর পাঁচ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হলেও এর মাত্র ২৫ ভাগ স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতার মাধ্যমে আসে। ৫০ ভাগ রিপ্লেসমেন্ট ডোনার বা আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতজনের মাধ্যমে এবং বাকি ২৫ ভাগ পেশাদার রক্তদাতার কাছ থেকে সংগৃহীত হয়। পেশাদার রক্তদাতারা এক-দুই মাস অন্তর বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে রক্ত দেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের শরীর অপুষ্ট থাকে। তাঁদের দেহে যৌনবাহিত ও রক্তবাহিত বিভিন্ন রোগ থাকতে পারে। কারণ তাঁরা অনেকে মাদকাসক্ত ও অনিরাপদ জীবনযাপন করেন। পক্ষান্তরে অপেশাদার রক্তদাতারা অর্থের বিনিময়ে নয়, রোগীর প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্ত দিয়ে থাকেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রোগ এবং ওষুধ দুটিই পাঠিয়েছেন এবং প্রতিটি রোগেরই ওষুধ প্রেরণ করেছেন। সুতরাং তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো। তবে হারাম বস্তু দিয়ে চিকিৎসা করো না।’ (মিশকাত, সুনানে আবু দাউদ)
মানবজীবন রক্ষায় স্বেচ্ছায় রক্তদান ইসলাম পরিপন্থী নয়। স্বেচ্ছায় রক্তদান সব ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজের শীর্ষে অবস্থান করছে। ১৮ থেকে ৫৫ বছর পর্যন্ত যেকোনো সুস্থ-সবল মানুষ তিন মাস অন্তর রক্ত দান করতে পারে, এতে শারীরিক কোনো ক্ষতি হয় না। রক্ত দেওয়ার সময় যদি কোনো রোগ-ব্যাধি যেমন জ্বর, ফোঁড়া প্রভৃতি থাকে এবং কোনো ধরনের এন্টিবায়োটিক চলে, তবে ওই মুহূর্তে রক্ত না দেওয়াই ভালো। কারও রক্তে যদি হেপাটাইটিসের জীবাণু ধরা পড়ে এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তবে তাকেও রক্তদানে নিরুৎসাহিত করা হয়। যে রক্তে রক্তবাহিত রোগ যেমন হেপাটাইটিস বি ও সি, এইচআইভি, সিফিলিস ও ম্যালেরিয়া অনুপস্থিত থাকে সাধারণত সে রক্তই নিরাপদ রক্ত। কাউকে রক্তদানের আগে রক্তাদাতার কোনো অসুখ আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য গবেষণাগারে স্ক্রিনিং পরীক্ষা করা হয়। রক্তে অন্তত ১০ গ্রাম/ডেসিলিটার হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকলে রক্তগ্রহীতার শরীরে রক্ত কোনো কাজে আসে না। কারণ রক্ত দেওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে ভলিউম বা পরিমাণ প্রতিস্থাপন এবং লোহিত রক্তকণিকা (যাতে হিমোগ্লোবিন থাকে) প্রতিস্থাপন। এ লোহিত কণিকার আয়ুষ্কাল ১২০ দিন বা চার মাস। তাই চার মাসের আগে রক্ত দেওয়া নিরাপদ নয়। তাহলে রক্তের মধ্যে শ্বেতকণিকা ও অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট থাকে না। রক্তদানের জন্য পুরুষের ন্যূনতম ওজন ৫০ কেজি বা ১০০ পাউন্ড এবং নারীর ৯৫ পাউন্ড হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের জীবন বাঁচাতে রক্তের কোনো বিকল্প নেই। রক্ত বেশি দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। তাই জরুরি মানবিক প্রয়োজনে রক্ত দেওয়ার জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ দলমত নির্বিশেষে সবার মানসিক প্রস্তুত থাকা উচিত। রক্তের সীমাহীন চাহিদা পূরণের জন্য ব্লাড ব্যাংকের ব্যবস্থা করা এবং স্বেছায় রক্তদান কর্মসূচি গ্রহণ করা একটি কার্যকর উদ্যোগ হতে পারে। স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য মানুষ যথেষ্ট আগ্রহী হলেও উদ্বুদ্ধকরণ উল্লেখযোগ্য নয়। ব্লাড ব্যাংকের অন্যতম সংগঠন কোয়ান্টাম উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সর্বপ্রথম সংগঠন ‘সন্ধানী’ ও ‘রেড ক্রিসেন্ট’-এর ব্লাড ব্যাংক রয়েছে। বাঁধন, লায়ন্স ক্লাব ও অরকা ডোনার সংগ্রহের কাজ করে থাকেন। রক্ত সংগ্রহের পাশাপাশি এগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সমাজের ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি, মসজিদের ইমাম-খতিব ও আলেমসমাজের অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত। মুমূর্ষু লোকের জীবন রক্ষা ও জনসেবামূলক কাজে যেহেতু ধর্মীয় বিধি-নিষেধ নেই, সেহেতু নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে রক্তদান বিষয়ক প্রচার, সেমিনার এবং ব্লাড ডোনেশন ডের মতো সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ একান্ত বাঞ্ছনীয়।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক একাডেমী, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়। পরিচালক, ইনস্টিটিউট অব হজরত মুহাম্মদ (সা.)। dr.munimkhan@yahoo.com

রক্তদানের গুরুত্ব …

রক্তদান কোন কঠিন বা দুঃসাহসের কাজ নয় । ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যে কোন সুস্থ , নীরোগ মানুষ ( পুরুষের ক্ষেএে ওজন কমপক্ষে ৪৮ কেজি , মেয়েদের ক্ষেএে ওজন কমপক্ষে ৪৫ কেজি ) । প্রতি চার মাস পরপর এক ব্যাগ রক্ত দিতে পারেন । এতে আপনার শারীরিক ক্ষতির কোন সম্ভব না নাই ।রক্ত দানের জন্য সাধারণ খাওয়া-দাওয়ায় যথেষ্ঠ । তবে রক্তদানের আগে ও পরে একটু বেশী পরিমানে পানি পান করবেন । রক্তদানের পর কিছু সময় বিশ্রাম নিবেন । এরপর দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজ করতে কোন বাধা নাই ।একজন মানুষের শরীরে থাকে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লিটার রক্ত । এক ব্যাগ রক্ত দান করা মানে ৩৫০ থেকে ৪৫০ মিলিলিটার রক্ত দান করা । রক্তরস বা প্লাজমার অভাব পূরণ হয়ে যায় বেশী পরিমান পানি পানের মাধ্যমেই । লোহিত কণিকা ১২০ দিন পরপর প্রতিস্থাপিত হয় । অথাৎ আপনি রক্ত দিন বা না দিন,১২০ পর সেটি মরে যাই এবং নতুন লোহিত কনিকা জন্ম নেয় । বিশুদ্ধ রক্ত পাওয়ার আশায় আমাদের দেশের মানুষ সন্ধানী , রেড কিসেন্ট , অরকা, বাধন, কোয়ান্টাম প্রভূতি সংগঠনের দ্বারস্থ হয় । এসব সংগঠন কিন্তু রক্ত তৈরী করে না । স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের দান করা রক্ত সরবরাহ করার মাধ্যম হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান । মানুষ যত বেশী রক্ত দিবে , এসব সংগঠন তত বেশী বিশুদ্ধ রক্ত সরবরাহ করতে পারবে । তাই স্বেচ্ছায় রক্ত দানে এগিয়ে আসুন । আপনার রক্তে বেচে থাকুক একটি সম্ভবনাময় প্রাণ ।।।

- সাইভার ওয়ার্ল্ড
http://www.tunerpage.com/

ব্লাড ব্যাংকের তথ্য
রক্তের গ্রুপ আপনার যাই হোক না কেন, প্রয়োজনের সময় রক্ত প্রাপ্তি অথবা দান সম্পর্কিত যে কোন তথ্য থেকে কখনোই দুরে নন আপনি । গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হলে আপনার বাংলা লিংক মোবাইল থেকে ডায়াল করুন ৮০৮০ নম্বরে, আর জেনে নিন নিকটস্থ রক্ত দান কেন্দ্র, হাসপাতাল অথবা রক্তদাতাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য । কলচার্জ প্রথম ৩ মিনিট ১৫ টাকা, পরবর্তী প্রতি মিনিট ৫ টাকা । ভ্যাট প্রযোজ্য ।

দু:সময়ের জন্য রক্ত সঞ্চয় করে কোয়ান্টাম

কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ রক্তের একটি প্রধান নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। দু:সময়ে রক্ত নিয়ে সকলের পাশে আছে কোয়ান্টাম। ১৯৯৬ সালে শুরু হয় কোয়ান্টামের স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম। স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমে কোয়ান্টাম ১৪ এপ্রিল ২০০০ সালে নিজস্ব আধুনিক ল্যব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নতুন ভাবে যাত্রা শুরু করে। আধুনিক প্রযুক্তি ও আপোষহীন মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ কোয়ান্টাম ল্যাব ২৪ ঘণ্টা সেবা দিচ্ছে। গত ৯ বছরে কোয়ান্টাম ল্যাব সরবরাহ করেছে প্রায় দুই লক্ষ ব্যাগ নিরাপদ রক্ত ও রক্ত উপাদান। গড়ে তুলেছে ১৪ হাজার জীবন ও ৮২ হাজার অনিয়মিত রক্তদাতার ডোনার পুল। আপনার দেয়া এক ব্যাগ রক্ত আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে রক্ত উপাদানে বিভাজিত হয়ে বাঁচাতে পারে ৪টি প্রাণ। তাই বন্ধু ও আত্মীয়দের রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করুন।

কোয়ান্টাম রক্ত কার্যক্রমের বিশেষত্ব

প্রতি ইউনিট রক্ত ও এর উপাদান স্বেচ্ছা দান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (who) নির্ধারিত মৌলিক ৫টি স্ক্রিনিং (হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, এইডস এবং ম্যালেরিয়া) বাধ্যতামূলকভাবে সম্পন্ন করা হয়। এগুলোর যে কোনোটির জীবাণু সম্পর্কে কোনোরকম সংশয় বা প্রশ্ন দেখা দিলে সে রক্তের ব্যাগ সাথে সাথে বাতিল বা ধ্বংস করা হয়। এই আপসহীন মনোভাবের কারণে ল্যাব থেকে সরবরাহকৃত রক্তের ব্যাপারে সারা দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এখন পুরোপুরি আস্থাশীল।

নিখুঁত ক্রস-ম্যাচিং অর্থাৎ থ্রি-ফেজ কম্প্যাটিবিলিটি (কক্ষ তাপমাত্রায়, ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এবং ইনডাইরেক্ট কুম্বস টেস্ট) টেস্ট করা হয়।

FDA অনুমোদিত উন্নতমানের (CPDA-১) ব্যাগে সযত্নে সংগৃহীত ও নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষিত।

নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক ল্যাব-এ রয়েছে সেল সেপারেটর সেন্ট্রিফিউজ মেশিন, -৯০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার ডিপ ফ্রিজ, প্লাটিলেট ইনকিউবেটর এবং এলাইজা মেশিনসহ প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি।

রক্তদাতাকে প্রদেয় সেবা

প্রতিবার রক্তদানের পর রক্তদাতা উপহার হিসেবে পাচ্ছেন রক্তবাহিত ৫ টি রোগের (হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, এইডস এবং ম্যালেরিয়া) স্কিনিং রিপোর্ট।

রক্তদাতা রক্তদানের পরই পাবেন ডোনার কার্ড।
রক্তদাতা নিজ দেহের প্রয়োজনে জমাকৃত প্রতি ব্যাগ রক্ত ফেরৎ পাবেন কোন প্রসেসিং খরচ ছাড়া । অর্থাৎ রক্তের ব্যাগ ও স্ক্রিনিং করচ বাবদও কোনো অর্থ দিতে হবেনা । অতিরিক্ত (সঞ্চিত রক্তের সম পরিমাণ) প্রতি ইউনিটে প্রসেসিং খরচ মাত্র ৫০%।
রক্তদাতা তার মা-বাবা, স্বামী/স্ত্রী বা সন্তানের জন্য প্রসেসিং খরচে (সঞ্চিত রক্তের সম পরিমাণ) ছাড় পাবেন ২০%।
তিনবার রক্তদানের পর আজীবন রক্তদানের প্রতিশ্রুতি দিলে রক্তদাতা পাবেন সিরামিকসে মুদ্রিত সুদৃশ্য সম্মননা স্মারক এবং বিশেষ আইডি কার্ড ও সনদপত্র।
১০ বার রক্তদান করে লাইফ লং ব্লাড ডোনার সিলভার ক্লাব-এর সদস্য হলে রক্তদাতা পাবেন বিশেষ সম্মাননা মেডেল, আইডি কার্ড ও সনদ পত্র।

নিরাপদ রক্তের জন্যেই কোয়ান্টাম
সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কোয়ান্টাম ল্যাব প্লাটিলেট কনসেনট্রেট, ফ্রেশ প্লাজমা, ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা, প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা, প্লাটিলেট পুওর প্লাজমা, প্রোটিন সলিউশন, আরসিসি, ক্রায়ো-প্রিসিপিটেট অর্থাৎ রক্তের ৮টি উপাদান সরবরাহ করছে। ফলে ডেঙ্গু, আইটিপি, থ্যালাসেমিয়া, ব্লাড ক্যান্সার, হিমোফিলিয়া, লিউকেমিয়া, আগুনে পোড়া, সিভিয়ার এনিমিয়াসহ যেকোনো রোগীর প্রয়োজনীয় রক্ত ও রক্ত উপাদানের জন্যে নিঃসঙ্কোচে যোগাযোগ করলে কোয়ান্টাম ল্যাব রক্ত সরবরাহ করে থাকে।

কোয়ান্টাম ল্যাব-এর ঠিকানা
স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম কোয়ান্টাম ল্যাব
৩১, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সড়ক (১১৯, পুরোনো শান্তিনগর ), ঢাকা-১২১৭ (ইস্টার্নপ্লাস মার্কেটের পূর্ব পাশে)
ফোন: ৯৩৫১৯৬৯, ৮৩২২৯৮৭, ০১৭১৪-০১০৮৬৯
ই-মেইল: blood@quantummethod.org.bd
ওয়েব সাইট: www.quantummethod.org

সন্ধানী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সন্ধানী বাংলাদেশের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান আন্দোলনের পথিকৃৎ "সন্ধানী"। বন্ধুর প্রতি ৬ জন উদ্যমী তরুণের অকৃত্রিম ভালবাসা থেকে জন্ম নেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের এই উজ্জ্বল নক্ষত্রটি। আর্থিক অনটনে জর্জরিত ২য় বর্ষের এক ছাত্রের সকালের নাস্তার টাকা যোগাড় করে দেয়ার মাধ্যমে হঠাৎ করেই সন্ধানীর আত্মপ্রকাশ। আত্মপ্রকাশের পরবর্তী এক বছর বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করলেও ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী’ সন্ধানীর কার্যক্রমের আওতাভুক্ত ছিল না। ১৯৭৮ সালের ২রা নভেম্বর ডিএমসিএইচ ব্লাড ব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর’ আয়োজন করে এবং পরবর্তীতে এই দিনটিকেই ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দেয়া হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে সন্ধানীর ১৮টি ইউনিট বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে একযোগে কাজ করছে। সন্ধানী মূলত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ছাত্রছাত্রী দ্বারা পরিচালিত একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ঐ নির্দিষ্ট ইউনিটের ছাত্রদের নিয়ে গঠিত ২৩ সদস্যের একটি কার্যকরী কমিটির মাধ্যমে আর সবগুলো ইউনিটকে সমন্বয় করার জন্য গঠন করা হয়েছে একটি ‘কেন্দ্রীয় পরিষদ’। সন্ধানীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী ডোনার ক্লাব সমূহ। প্রতিবছর সন্ধানী গড়ে ৪০,০০০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে। যা দেশের চাহিদা অনুযায়ী অনেক কম হলেও দেশের রক্তের অভাব পূরণে এক দৃঢ় ভূমিকা পালন করছে।