Monday, January 16, 2012

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য চালু হচ্ছে স্বাস্থ্যবীমা

এফএনএস: দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবীমা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যবীমার আওতায় দেশের প্রায় সোয়া ২ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে এর পরিধি বাড়ানো হবে। ইতিমধ্যে সরকার দেশের সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য স্বাস্থ্যবীমার কাজ শুরু করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে দেশে স্বাস্থ্যবীমা কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী। মূলত স্বাস্থ্যবীমার আওতায় দেশের সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকেই বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চিকিৎসার নামে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করতে না পারার দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠি চিকিৎসা সেবা থেকে দূরে থাকে। এ চিত্র শুধু এদেশেই নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও তা বিদ্যমান। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার চাচ্ছে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে। এ লক্ষ্যেই সরকার স্বল্প আয়ের মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে কাজ করছে। এজন্য সরকার সুবিধাবঞ্চিতদের চিকিৎসা সেবার জন্য বিশেষ ধরনের কার্ড সরবরাহ করবে। যাতে নির্ধারিত কার্ডের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত চিকিৎসা নিতে পারে।
সূত্র জানায়, এই প্রথমবারের মতো সরকার কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যদিও ভারত, থাইল্যান্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে গরিব জনগোষ্ঠিকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। সরকার ওসব দেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাচ্ছে। এজন্য কয়েকটি দেশের বিনামূল্যের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সরেজমিন দেখে এসেছে এদেশীয় প্রতিনিধি দল।
সূত্র আরো জানায়, সরকার ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যবীমা নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তাছাড়া বর্তমান সরকার দেশের স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ কারণে বর্তমানে এদেশের নবজাতকের মৃত্যুহার কমে এসেছে। মাতৃমৃত্যুর হারও অনেক কমে গেছে। সরকার মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে মাতৃকালীন ছুটি ৪ মাস থেকে বাড়িয়ে ৬ মাস করেছে। যদিও দেশের স্বাস্থ্যখাতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয় উন্নত দেশগুলোর তুলনায় তা অনেক কম। তাছাড়া দেশে সরকারি ও বেসরকারি সেক্টর মিলিয়ে বর্তমানে বিদ্যমান হাসপাতালগুলোতে যে পরিমাণ শয্যা সংখ্যা রয়েছে, জনসংখ্যা অনুপাতে তা খুবই কম। এ পরিস্থিতিতে সরকার গত ৩ বছরে সরকারি মেডিকের কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়িয়েছে।
দেশের বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে স্বাস্থ্যখাতে ৩ হাজার ১২ জনের জন্য চিকিৎসক আছেন ১ জন। আর ২ হাজার ৬৬৫ জনের জন্য হাসপাতালে শয্যা আছে ১টি। তাছাড়া ১ জন নার্স রয়েছেন ৬ হাজার ৩৪২ জনের বিপরীতে। দেশে চিকিৎসকের সাথে নার্সের আনুপাতিক হার এখনো সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে সরকার এ ব্যবধান কমিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানান, গ্রামে নিয়োগকৃত চিকিৎসকরা ঠিকমতো কর্মস্থলে যাচ্ছেন কিনা তা এখন ঢাকায় বসেই ইলেকট্রনিক উপায়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। কোথাও অনিয়ম দেখার সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া চিকিৎসকদের গ্রামে রাখতে সরকার বাড়ি ভাড়া কমানো, উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়াসহ নানা উৎসাহব্যঞ্জক কার্যক্রম হাতে নেয়ারও চিন্তা করছে সরকার।

Monday, 16 January 2012


No comments:

Post a Comment