Monday, March 28, 2011

বান্দরবানে আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্যে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প শুরু

আয়োজিত ক্যাম্পে আনসার ভিডিপি সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে





















বান্দরবানে আনসার ভিডিপি সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর আওতায় বান্দরবানের সাতটি উপজেলার প্রায় ১১ শ' আনসার ভিডিপি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে বান্দরবান জেলা আনসার ভিডিপি কার্যালয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সেনাবাহিনীর সদর জোনের কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ সাইদ সিদ্দিকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আনসার এ্যাডজুটেন্ট নুরে আলম সিদ্দিকী। এছাড়া অনুষ্ঠানে আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে চিকিৎসকরা গ্রাম ভিডিপি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও তাদের মাঝে ঔষধ বিতরণ করেন।
আগে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনসার সদস্যরা সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পেলেও ভিডিপি সদস্যরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এখন থেকে ভিডিপি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা প্রতিবছর বিনামূল্যে আনসার কার্যালয় থেকে চিকিৎসা সেবা পাবেন। এর ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের দূর্গম এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পে ও গ্রাম প্রতিরক্ষার কাজে নিয়োজিত ভিডিপি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা সেবার আওতায় এলেন।


সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১১

Monday, March 14, 2011

স্বাস্থ্য সেবায় মোবাইল ফোন

অসুস্থ্য মাকে নিয়ে কালাম মিঞার যত দুঃশ্চিন্তা। গত দশ বছরে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত কালাম মিঞার মায়ের ইদনিং যুক্ত হয়েছে প্রচন্ড মাথা ব্যথা। গত একমাস যাবত প্রচন্ড মাথা ব্যথায় প্রায় প্রায় সজ্জাসায়ি হতে হয় তাকে। সন্তানের কাছে মায়ের একটি আবেদন এই শেষ বয়সে ঢাকায় এনে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। কালাম মিঞায়র মত এক জন নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকের জন্য সংসারের খরচ চালিয়ে, মায়ের চিকিৎসা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মায়ের শেষ অনুরোধটুকু রক্ষা করার জন্য তার শেষ সম্বল জমির কিছু অংশ বন্ধক রেখে ঢাকা এসে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সে জানেনা কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে এবং কি ভাবে চিকিৎসা করবে। অবশেষে মাকে নিয়ে এম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং ড্রাইভারের পরামর্শে একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন ও অবশেষে সর্বসান্ত হয়ে ভুল চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।

সঠিক তথ্যের অভাবে আমাদের দেশে এভাবে বহু রোগী প্রতিদিন সর্বসান্ত হয়ে যাচ্ছে।স্বাস্থ্য খাতে মোবাইল ফোনই পারে এসকল রোগীদের সঠিক তথ্য প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। আমাদের দেশে যেখানে শতকরা ৭০ ভাগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বড় বড় শহরগুলোতে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে অন্যদিকে দেশের ৭০ ভাগ গ্রাম ও উপজেলায় বসবাস করার জন্য দেশের এ সকল অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নদীমাতৃক আমাদের এই দেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যতটা উন্নয়ন হয়নি তার চেয়ে অনেক বেশী উন্নয়ন হয়েছে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। এই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে Mobile Health System (mHealth system ) ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একদল অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও কম্পিউটার বিশেষজ্ঞের মেধা ও আন্তরিকতাই পারে এসকল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌছে দিতে। বিশ্বের অনেক উন্নয়শীল দেশে এই মোবাইল ফোনকে কাজে লাগিয়ে (mHealth system) এর মাধ্যমে দরিদ্র জন গোষ্ঠির মাঝে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌছিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা আনুমানিক ৭০ লক্ষ। তাই এই মোবাইল ফোন দিয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রামে বসবাসকারী দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারনা দেওয়া যেতে পারে। তাই আধুনিক এই সিস্টেম ব্যবহার করে সরকার স্বাস্থ্য খাতকে অল্প সময়ে ও অল্পখরচে ডিজিটালাইজড করতে পারবে।

কি ভাবে সম্ভব

ATI MobiHealth নামক একটি mobile application software যা মোবাইল ফোনে Install করে বাংলাদেশে বর্তমানে মোবাইল নেটওয়ার্ক সিস্টেমটি ব্যবহার করে আমাদের দেশের ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তারাই পারবে mHealth (Mobile Health System) সিষ্টেম চালু করতে। এই সিষ্টেম দ্বারা একজন রোগী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অতি অল্প খরচে সহজে ডাক্তার, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক ল্যাব ও ঔষধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে পারে, যার মাধ্যমে রোগী অতি সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং ডাক্তারগন রোগীদের চিকিৎসা সেবা পৌছাতে পারবেন।

কি কি প্রয়োজন

মোবাইল ফোন, mobile application software (ATI MobiHealth) মোবাইল নেটওয়ার্ক, ও ডাটা সংরক্ষন এর জন্য Central Server। যা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোন একজন রোগীর অনুসন্ধান Central Server থেকে সংগ্রহ করতে পারবে ।

mHealth সিষ্টেম থেকে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে

  • স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাবে।
  • দেশের অনুন্নত জায়গা গুলো থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ক ডাটা সংগ্রহ করা যাবে।
  • কোন রোগের জন্য কোন ডাক্তার কখন ও কোথায় রোগী দেখেন এসম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে।
  • অতি সহজেই বিষেশঞ্জ ডাক্তারের Appointment নেওয়া যাবে।
  • কোন হাসপাতালে কি ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয় সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।
  • বিভিন্ন দুর্ঘটনায় জরুরী চিকিৎসা যেমন সাপে কাটা ইত্যাদি সম্পর্কে চিকিৎসা পাওয়া যাবে।
  • কোন ল্যাব এ কি কি ধরনের টেস্ট হয় তার সম্পর্কে তাৎক্ষনিক তথ্য পাওয়া যাবে।
  • অনুন্নত জায়গায় কোন রোগ সম্পর্কে আগাম সতর্কতা জানানো যাবে।
  • খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে দরিদ্য জনগোষ্টির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাবে।

ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জাহিদুল হাসান
সিনিয়র সিস্টেম এ্যানালিষ্ট ও বিভাগীয় প্রধান
ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিট
বারডেম হাসপাতাল, শাহবাগ, ঢাকা
email: jahid@dab-bd.org

Thursday, March 10, 2011

Low cost and free Kidney treatment in KAMPS, Bangladesh



কিডনি বিকল হয়ে ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয় তৌফিক মারুফবাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচজন মানুষ কিডনি বিকল হয়ে মারা যান। এ ছাড়া দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে ভুগছেন। তার পরও কিডনি রোগের চিকিৎসাব্যবস্থায় লক্ষণীয় উন্নতি নেই। অবস্থা একেবারেই নাজুক। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কিডনি রোগীদের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে চিকিৎসাব্যবস্থা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. শিফায়েতুল্লাহ এ পরিস্থিতির সঙ্গে একমত পোষণ করে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'দেশে ক্যান্সার ও হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গেছি। সেই তুলনায় কিডনি চিকিৎসাব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে বলে আমার নিজেরও উপলব্ধি। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ ঘটাতে না পারলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে সাফল্য আসবে না।'
বিএমএর সাবেক সভাপতি ও জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, 'এ দেশে কিডনি রোগীর চিকিৎসা ব্যয় বহন করা বেশির ভাগ মানুষের জন্যই খুব কঠিন। এর ওপরে সরকারি হাসপাতালগুলোতে যেসব পদক্ষেপ রয়েছে, তা-ও নানান অব্যবস্থাপনার কারণে সচল থাকছে না। যন্ত্রপাতি ক্রয়ের অস্বচ্ছতার কারণে অনেক স্থানেই অনেক যন্ত্রপাতি অসময়ে বিকল হয়ে পড়ে।'
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক অ্যান্ড কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাহ উদ্দিন মাহমুদ দেশে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচজন মানুষ কিডনি বিকল হয়ে মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একজন কিডনি রোগী তাঁর দুটি কিডনিই যখন ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিকল হয়ে পড়ে তখনই তিনি এ রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যাঁদের বেশি টাকা আছে, তাঁরাই হয়তো ব্যয়বহুল ডায়ালাইসিস বা দেশের বাইরে গিয়ে আরো কোনো উন্নত চিকিৎসার সুবিধা নিতে পারেন। দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে এমন সুবিধা বেশি দিন চালিয়ে নেওয়া একেবারেই দুরূহ।'
ডা. সালাহ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'এ দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেসব চিকিৎসা সুবিধা আছে, সেগুলো একে তো পর্যাপ্ত নয়, তার ওপর বিভিন্ন সমস্যার কারণে এসব ব্যবস্থাপনার বেশির ভাগই অকার্যকর। তাই সরকারের উচিত দেশব্যাপী কিডনি চিকিৎসাব্যবস্থাপনা আরো জোরদার করা। এ ক্ষেত্রে প্রাইভেট উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত।'
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, 'যেসব সরকারি হাসপাতালে কিডনি ইউনিট রয়েছে, সেগুলোকে যথাযথভাবে কার্যকর করাসহ নতুন করে বিভিন্ন হাসপাতালে কিডনি চিকিৎসার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া মেডিক্যাল কলেজেও নেফ্রোলজি ও ইউরোলজির বিভাগকে আরো শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতি নেই। কোনো কোনো হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিনগুলো অচল হয়ে পড়ে আছে অনেকদিন ধরে। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় এ চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল।
কিডনি রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগীর সংখ্যা এবং এর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা সঠিকভাবে গণনা করা হয়ে ওঠে না। কারণ একজন কিডনি রোগী হৃদরোগে মারা গেলে মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ বলেই উল্লেখ করা হয়। কেবল যাঁরা কিডনি রোগের শেষ ধাপে পেঁৗছে কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, তাঁদের নামই শুধু লিপিবদ্ধ করা হয় কিডনি রোগে মৃত্যুর তালিকায়।
ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, 'কিডনি রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে সচেতনতা। আগেভাগেই যদি এ রোগ ও রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা যায়, সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়, তবেই কিডনি বিকল হয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব।'
বিশেষজ্ঞরা বলেন, 'কিডনি বিকলপর্যায়ের রোগীকে ডায়ালাইসিস এবং পরবর্তী সময়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়। ডায়ালাইসিস এবং প্রতিস্থাপন ব্যয়বহুল হওয়ায় এ দেশের ৯৫ শতাংশ রোগীর পক্ষেই এই চিকিৎসা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। শুধু ডায়ালাইসিস (যন্ত্রের মাধ্যমে রক্ত পরিশুদ্ধ করা) বছরে একজন রোগীর প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়। এ ছাড়া কিডনি পাওয়া সাপেক্ষে কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ কমবেশী পাঁচ লাখ টাকা, পাশাপাশি ওষুধের খরচ চালাতে হবে বাকি জীবন।'
এদিকে ন্যাশনাল কিডনি ডিজেজ অ্যান্ড ইউরোলজি ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পরিচালিত ২০০৬-০৯ সাল পর্যন্ত জরিপের ফলাফলে জানা গেছে, কিডনি রোগে আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক (৬৫ শতাংশ) হচ্ছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী। এ ছাড়া ৩০ শতাংশ রয়েছে ৫০ বছরের ওপরে, ৪ শতাংশ রয়েছে পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সের এবং মাত্র ১ শতাংশ রয়েছে এক থেকে চার বছর বয়সের। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস পালন উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

Source: http://www.kalerkantho.com, 10th march, 2011
শরীয়তপুরে বিনামূল্যে চিকিৎসা পেলেন ৫ শতাধিক দরিদ্র মানুষ
কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটির (ক্যাম্পস) উদ্যোগে শরীয়তপুর পৌরসভায় দিনব্যাপী ফ্রি কিডনি ক্যাম্প ও সচেতনতামূলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ কিডনি চিকিৎসকসহ ১০ চিকিৎসক শরীয়তপুরসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা ৫ শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেন এবং এর মাধ্যমে দুই শতাধিক রোগীর কিডনি রোগ নির্ণয়, ডায়াবেটিস ও ইউরিন পরীক্ষা কা হয়।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ সানোয়ার হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এমএ সামাদ, সিভিল সার্জন ডা. মোঃ গোলাম সারোয়ার, পুলিশ সুপার একেএম শহিদুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল ফজল মাস্টার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ সুলতান হোসেন মিয়া, ক্যাম্পসের মহাপরিচালক নাসরিন বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, শরীয়তপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মির্জা এ সাইদ প্রমুখ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

Source: http://www.samakal.com.bd
১৭ জানুয়ারি ২০১১


সুমন কুমার রায় , টাঙ্গাইল থেকে
তাজাখবর ডটনেট

বাংলাদেশের প্রায় ২ কোটি লোক কোন না কোন কিডনী রোগে আক্রান্ত। কিডনী সম্পূর্ণ বিকল হয়ে প্রতিঘন্টায় ৫ জন কিডনী রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। কিডনী বিকল রোগী বেচে থাকার একমাত্র উপায় ডায়ালাইসিস অথবা কিডনী সংযোজন। কিডনী রোগীদের ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা দিতে টাঙ্গাইলে ক্যাম্পস কিডনী সেন্টারের উদ্ভোধন করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইল রেজিষ্ট্রিপাড়া ক্যাম্পস কিডনী সেন্টারের উদ্ভোধন করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অবঃ) মজিবুর রহমান ফকির।
বুরো বাংলাদেশ ট্রেনিং সেন্টারে আয়োজিত উদ্ধোধনী অণুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সুপ্রিম কোর্টে সিনিয়র আইনজীবী সাবেক এটর্নী জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক উল হক, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্রশাসক ফজলুর রহমান ফারুক, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক এম বজলুল করিম চৌধুরী, সির্ভিল সার্জন ডা. আব্দুল বাছিত ও কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ।
উদ্ধোধনী অণুষ্ঠানের আগে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও অতিথিবৃন্দ ক্যাম্পস কিডনী সেন্টারে ডায়ালাইসিস রোগীদের ঘুরে দেখেন।


Related Link:

Tuesday, March 1, 2011

দেশেই বিনামূল্যে কিডনি সংযোজন চলছে, পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নেই: দাতা হতে হবে নিকটাত্মীয়

দেশেই বিনামূল্যে কিডনি সংযোজন চলছে, পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নেই
দাতা হতে হবে নিকটাত্মীয়

বশিরুল ইসলাম ॥ আর নয় বিদেশে, দেশেই বিনা টাকায় কিডনি সংযোজন কার্যকম শুরম্ন করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ও ইউরোলজি হাসপাতালে। পাশাপাশি দেশের বেশ কয়েকটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে নামমাত্র খরচে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। কোন পাশর্্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই চলছে একের পর এক কিডনি সংযোজন। জাতীয় কিডনি হাসপাতালে সংযোজিত কিডনি নিয়ে অনেক মানুষ বছরের পর বছর বেঁচে আছেন। চালিয়ে যাচ্ছেন সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন। ব্রেন ডেথ তথা মৃত ব্যক্তির কিডনি সংযোজনের প্রস্তুতি চলছে হাসপাতালে। একই চিকিৎসা বিদেশে করাতে হলে ব্যয় পড়ে ৮ থেকে ১৫ লাখ টাকা।
কিডনি সংযোজনপরবর্তী চিকিৎসার অংশ হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হাসপাতালে এসেছেন রাজশাহী বাগমারা উপজেলা কাঁঠালপাড়ার সাহেরা বেগম (৩৮)। তাঁর সঙ্গে রয়েছে প্রিয় সনত্মান মোঃ সাইফুল ইসলাম (২৩)। দু'টি কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে সাইফুলের জন্য একটি কিডনি দেন মা সাহেরা বেগম। ২০১০ সালের ২৬ ডিসেম্বর মায়ের দেয়া কিডনি সংযোজন করা হয় সাইফুলের শরীরে। হাসপাতালে ইউরোলজি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ কামরম্নল ইসলাম ও ডা. মোসাঃ রমির ১১৯ নম্বর কক্ষে বসে আলাপ হয় সাহেরা বেগম ও তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। সাহেরা বেগম জনকণ্ঠকে জানান, সনত্মানকে বাঁ পাশের কিডনি দিয়েছি আমি। কিডনি দেয়ার প্রায় দুই মাস পার হয়ে গেছে। দেখা দেয়নি কোন পাশর্্বপ্রতিক্রিয়া। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি। হাসপাতালে বিনা টাকায় কিডনি সংযোজন করি এবং সংযোজনপরবর্তী ওষুধের খরচসহ ২ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে বলে তিনি জানান। কিডনি সংযোজনের পর স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে বলে হাসিমুখে জানায় সাহেরার ছেলে সাইফুল ইসলাম। ডা. মোঃ কামরম্নল ইসলামও জানান, বর্তমানে তারা দু'জনের স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। চার মাস পর সাইফুল তার আগে মতো সকল কাজকর্ম করতে পারবে।
কিডনি সংযোজনের সফলতার কথা হাসপাতালে পরিচালক অধ্যাপক ডা. জামানুল ইসলাম ভুঁইয়া জনকণ্ঠকে জানান, ২০০৮ সাল থেকে এই হাসপাতালে জীবিত নিকটাত্মীয়ের কিডনি সংযোজন কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে চলে আসছে। এ পর্যনত্ম কিডনিদাতা ও রোগী কোন ধরনের সমস্যায় পড়েননি। প্রতি শনিবার আমরা এই প্রতিষ্ঠানে বিনা টাকায় কিডনি সংযোজন করছি। তবে এক্ষেত্রে কিডনি ডোনার থাকতে হবে। তিনি আরও জানান, দেশে বর্তমানে শুধু জীবিত নিকটাত্মীয়ের মধ্যে কিডনি সংযোজন হচ্ছে। ব্রেন ডেথ তথা মৃত ব্যক্তির কিডনি সংযোজনের প্রস্তুতি চলছে হাসপাতালে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেফ্রোলজি, ইউরোলজি ও এ্যানেস্থেসিওলোজি বিভাগের সমন্বয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি করে কিডনি সংযোজন হচ্ছে। এ ছাড়া কিডনি ফাউন্ডেশন, বারডেম হাসপাতাল এবং সম্প্রতি ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়মিতভাবে কিডনি সংযোজন চলছে।
মৃত ব্যক্তি ও জীবিত নিকটাত্মীয়ের যে কোন একটি কিডনি নিয়ে সংযোজন করা যায়। রোগীর কিডনি দু'টি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেলে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন হয় ডায়ালিসিসের। রোগীর উপসর্গের ইতিহাস, রক্তের ক্রিয়েটিনিন, ইউরিয়া, ইলেকট্রোলাইট, সনোগ্রাম করে কিডনির অবস্থান ও সাইজ দেখা, জিএফআর অথবা সিআর ইত্যাদি দিক পরীক্ষা করে কিডনি অকেজো নির্ণয় করা হয়। কিডনি সম্পূর্ণ অকেজো জানার পরই ডায়ালিসিস করার সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়। পেরিটোনিয়েল ডায়ালিসিস ও হেমোডায়ালিসিস_এ দু'ধরনের ডায়ালিসিসের প্রচলন রয়েছে। তবে হেমোডায়ালিসিস শুরম্ন করার আগে সাধারণত বাঁ হাতের কব্জির ওপরে একটি এ-ভি ফিস্টুলা তৈরি করে নেয়া হয় যা পরিপক্ব হতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগে। হেমোডায়ালিসিস বা মেশিনের পাশাপাশি রোগীকে ও তাঁর নিকটপরিজনকে রোগ সম্পর্কে ধারণা, চিকিৎসার ভবিষ্যত পরিকল্পনা, সুযোগ-সুবিধা এবং আর্থিক দিক সম্পর্কেও ধারণা দেয়া হয়। একজন রোগীকে সবদিক বিবেচনা করে যখন কিডনি সংযোজন কর্মসূচীতে যখন মনোনীত করা হয় তখন সেই রোগীকে কিডনি সংযোজনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়। কিডনিদাতা পাওয়া না গেলে ডায়ালিসিস চালু রাখতে হয়। এ জন্য বছরে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর প্রাইভেট হাসপাতালে ডায়ালিসিস করাতেই প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা ব্যয়ের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, নিজেরা কিডনি দেয়ার পরও সিঙ্গাপুরে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা, থাইল্যান্ডে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ভারতে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা লাগে সংযোজনের জন্য।

Source: http://www.dailyjanakantha.com
১ মার্চ ২০১১