Monday, March 28, 2011
বান্দরবানে আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্যে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প শুরু
Monday, March 14, 2011
স্বাস্থ্য সেবায় মোবাইল ফোন
অসুস্থ্য মাকে নিয়ে কালাম মিঞার যত দুঃশ্চিন্তা। গত দশ বছরে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত কালাম মিঞার মায়ের ইদনিং যুক্ত হয়েছে প্রচন্ড মাথা ব্যথা। গত একমাস যাবত প্রচন্ড মাথা ব্যথায় প্রায় প্রায় সজ্জাসায়ি হতে হয় তাকে। সন্তানের কাছে মায়ের একটি আবেদন এই শেষ বয়সে ঢাকায় এনে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। কালাম মিঞায়র মত এক জন নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকের জন্য সংসারের খরচ চালিয়ে, মায়ের চিকিৎসা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মায়ের শেষ অনুরোধটুকু রক্ষা করার জন্য তার শেষ সম্বল জমির কিছু অংশ বন্ধক রেখে ঢাকা এসে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সে জানেনা কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে এবং কি ভাবে চিকিৎসা করবে। অবশেষে মাকে নিয়ে এম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং ড্রাইভারের পরামর্শে একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন ও অবশেষে সর্বসান্ত হয়ে ভুল চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
সঠিক তথ্যের অভাবে আমাদের দেশে এভাবে বহু রোগী প্রতিদিন সর্বসান্ত হয়ে যাচ্ছে।স্বাস্থ্য খাতে মোবাইল ফোনই পারে এসকল রোগীদের সঠিক তথ্য প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। আমাদের দেশে যেখানে শতকরা ৭০ ভাগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বড় বড় শহরগুলোতে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে অন্যদিকে দেশের ৭০ ভাগ গ্রাম ও উপজেলায় বসবাস করার জন্য দেশের এ সকল অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
নদীমাতৃক আমাদের এই দেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যতটা উন্নয়ন হয়নি তার চেয়ে অনেক বেশী উন্নয়ন হয়েছে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। এই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে Mobile Health System (mHealth system ) ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একদল অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও কম্পিউটার বিশেষজ্ঞের মেধা ও আন্তরিকতাই পারে এসকল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌছে দিতে। বিশ্বের অনেক উন্নয়শীল দেশে এই মোবাইল ফোনকে কাজে লাগিয়ে (mHealth system) এর মাধ্যমে দরিদ্র জন গোষ্ঠির মাঝে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌছিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা আনুমানিক ৭০ লক্ষ। তাই এই মোবাইল ফোন দিয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রামে বসবাসকারী দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারনা দেওয়া যেতে পারে। তাই আধুনিক এই সিস্টেম ব্যবহার করে সরকার স্বাস্থ্য খাতকে অল্প সময়ে ও অল্পখরচে ডিজিটালাইজড করতে পারবে।
কি ভাবে সম্ভব
ATI MobiHealth নামক একটি mobile application software যা মোবাইল ফোনে Install করে বাংলাদেশে বর্তমানে মোবাইল নেটওয়ার্ক সিস্টেমটি ব্যবহার করে আমাদের দেশের ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তারাই পারবে mHealth (Mobile Health System) সিষ্টেম চালু করতে। এই সিষ্টেম দ্বারা একজন রোগী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অতি অল্প খরচে সহজে ডাক্তার, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক ল্যাব ও ঔষধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে পারে, যার মাধ্যমে রোগী অতি সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং ডাক্তারগন রোগীদের চিকিৎসা সেবা পৌছাতে পারবেন।
কি কি প্রয়োজন
মোবাইল ফোন, mobile application software (ATI MobiHealth) মোবাইল নেটওয়ার্ক, ও ডাটা সংরক্ষন এর জন্য Central Server। যা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোন একজন রোগীর অনুসন্ধান Central Server থেকে সংগ্রহ করতে পারবে ।
mHealth সিষ্টেম থেকে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে
- স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাবে।
- দেশের অনুন্নত জায়গা গুলো থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ক ডাটা সংগ্রহ করা যাবে।
- কোন রোগের জন্য কোন ডাক্তার কখন ও কোথায় রোগী দেখেন এসম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে।
- অতি সহজেই বিষেশঞ্জ ডাক্তারের Appointment নেওয়া যাবে।
- কোন হাসপাতালে কি ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয় সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।
- বিভিন্ন দুর্ঘটনায় জরুরী চিকিৎসা যেমন সাপে কাটা ইত্যাদি সম্পর্কে চিকিৎসা পাওয়া যাবে।
- কোন ল্যাব এ কি কি ধরনের টেস্ট হয় তার সম্পর্কে তাৎক্ষনিক তথ্য পাওয়া যাবে।
- অনুন্নত জায়গায় কোন রোগ সম্পর্কে আগাম সতর্কতা জানানো যাবে।
- খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে দরিদ্য জনগোষ্টির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাবে।
Thursday, March 10, 2011
Low cost and free Kidney treatment in KAMPS, Bangladesh
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খন্দকার মো. শিফায়েতুল্লাহ এ পরিস্থিতির সঙ্গে একমত পোষণ করে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'দেশে ক্যান্সার ও হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গেছি। সেই তুলনায় কিডনি চিকিৎসাব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে বলে আমার নিজেরও উপলব্ধি। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণ ঘটাতে না পারলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে সাফল্য আসবে না।'
বিএমএর সাবেক সভাপতি ও জাতীয় স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, 'এ দেশে কিডনি রোগীর চিকিৎসা ব্যয় বহন করা বেশির ভাগ মানুষের জন্যই খুব কঠিন। এর ওপরে সরকারি হাসপাতালগুলোতে যেসব পদক্ষেপ রয়েছে, তা-ও নানান অব্যবস্থাপনার কারণে সচল থাকছে না। যন্ত্রপাতি ক্রয়ের অস্বচ্ছতার কারণে অনেক স্থানেই অনেক যন্ত্রপাতি অসময়ে বিকল হয়ে পড়ে।'
আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক অ্যান্ড কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাহ উদ্দিন মাহমুদ দেশে প্রতি ঘণ্টায় পাঁচজন মানুষ কিডনি বিকল হয়ে মারা যাওয়ার তথ্য জানিয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একজন কিডনি রোগী তাঁর দুটি কিডনিই যখন ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিকল হয়ে পড়ে তখনই তিনি এ রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যাঁদের বেশি টাকা আছে, তাঁরাই হয়তো ব্যয়বহুল ডায়ালাইসিস বা দেশের বাইরে গিয়ে আরো কোনো উন্নত চিকিৎসার সুবিধা নিতে পারেন। দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে এমন সুবিধা বেশি দিন চালিয়ে নেওয়া একেবারেই দুরূহ।'
ডা. সালাহ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'এ দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেসব চিকিৎসা সুবিধা আছে, সেগুলো একে তো পর্যাপ্ত নয়, তার ওপর বিভিন্ন সমস্যার কারণে এসব ব্যবস্থাপনার বেশির ভাগই অকার্যকর। তাই সরকারের উচিত দেশব্যাপী কিডনি চিকিৎসাব্যবস্থাপনা আরো জোরদার করা। এ ক্ষেত্রে প্রাইভেট উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত।'
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, 'যেসব সরকারি হাসপাতালে কিডনি ইউনিট রয়েছে, সেগুলোকে যথাযথভাবে কার্যকর করাসহ নতুন করে বিভিন্ন হাসপাতালে কিডনি চিকিৎসার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া মেডিক্যাল কলেজেও নেফ্রোলজি ও ইউরোলজির বিভাগকে আরো শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'
দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতি নেই। কোনো কোনো হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিনগুলো অচল হয়ে পড়ে আছে অনেকদিন ধরে। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় এ চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল।
কিডনি রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগীর সংখ্যা এবং এর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা সঠিকভাবে গণনা করা হয়ে ওঠে না। কারণ একজন কিডনি রোগী হৃদরোগে মারা গেলে মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ বলেই উল্লেখ করা হয়। কেবল যাঁরা কিডনি রোগের শেষ ধাপে পেঁৗছে কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, তাঁদের নামই শুধু লিপিবদ্ধ করা হয় কিডনি রোগে মৃত্যুর তালিকায়।
ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, 'কিডনি রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে সচেতনতা। আগেভাগেই যদি এ রোগ ও রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা যায়, সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করা যায়, তবেই কিডনি বিকল হয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব।'
বিশেষজ্ঞরা বলেন, 'কিডনি বিকলপর্যায়ের রোগীকে ডায়ালাইসিস এবং পরবর্তী সময়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়। ডায়ালাইসিস এবং প্রতিস্থাপন ব্যয়বহুল হওয়ায় এ দেশের ৯৫ শতাংশ রোগীর পক্ষেই এই চিকিৎসা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। শুধু ডায়ালাইসিস (যন্ত্রের মাধ্যমে রক্ত পরিশুদ্ধ করা) বছরে একজন রোগীর প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়। এ ছাড়া কিডনি পাওয়া সাপেক্ষে কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ কমবেশী পাঁচ লাখ টাকা, পাশাপাশি ওষুধের খরচ চালাতে হবে বাকি জীবন।'
এদিকে ন্যাশনাল কিডনি ডিজেজ অ্যান্ড ইউরোলজি ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পরিচালিত ২০০৬-০৯ সাল পর্যন্ত জরিপের ফলাফলে জানা গেছে, কিডনি রোগে আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক (৬৫ শতাংশ) হচ্ছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী। এ ছাড়া ৩০ শতাংশ রয়েছে ৫০ বছরের ওপরে, ৪ শতাংশ রয়েছে পাঁচ থেকে ১৪ বছর বয়সের এবং মাত্র ১ শতাংশ রয়েছে এক থেকে চার বছর বয়সের। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস পালন উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
Source: http://www.kalerkantho.com, 10th march, 2011
শরীয়তপুরে বিনামূল্যে চিকিৎসা পেলেন ৫ শতাধিক দরিদ্র মানুষ